৩০ বছরের মধ্যে ধনী হতে চাইলে গ্রাহামের ৭টি পরামর্শ মানুন

প্রিয় পাঠকগন, আজকে আমি আপনাদের মাঝে এমন একটা বিষয়ে লিখতে চাই আর তা হলো ধনী হওয়ার। পৃথিবীতে এমন কোন লোক নেই যে ধনী হতে চাই না। তবে আবার ব্যতিক্রম লোক ও কিন্তু থাকে। তবে আমি আপনাদেরকে জানাতে চাই আপনি কিভাবে ধনী হবেন সেই বিষয়ে। বলা সহজ হলেও করা কিন্তু কঠিন আর সেই জন্য আপনাকে অবশ্যই মানতে হবে গ্রাহাম ষ্টেফানের এ ৭টি 

৩০ বছরের মধ্যে ধনী হতে চাইলে গ্রাহামের ৭টি পরামর্শ মানুন

পরামর্শ যা আপনাকে আপনার লক্ষ্যে নিয়ে যেতে সাহায্য করবে। প্রথমেই আপনাকে পরামর্শ গুলোর প্রতি মনোযোগী হতে হবে আর তার পাশাপাশি আপনাকে সেই সব পরামর্শ গুলোকে যথাযথ ভাবে পালন করে যেতে হবে। তাহলেই আপনি আপনার লক্ষ্যে স্থানে পৌঁছাতে পারবেন।

ভুমিকা

পৃথিবীটা বড়ই আজব এক জায়গা। কেউ কিন্তু বসে থাকে না কিছু না কিছু করার তাগিতে বা টাকা আয় রোজগারের উদ্দেশ্যে কাজ করছে। আবার অনেকে ধনী হওয়ার জন্য পরিশ্রম করে চলেছে। কিন্তু সঠিক পরামর্শ ছাড়া লক্ষ্যে পৌঁছানো দুরুহ ব্যাপার। আর সেই সব বিষয়ের প্রতি মাথায় রেখে আজকে আমি আপনাদেরকে জানাব যে কোন কোন ৭টি বিষয়ের উপরে পরামর্শ নিলে বা মেনে চললে আপনি ধনী হবেন। মার্কিন রিয়েল এষ্টেট ব্যবসায়ী গ্রাহাম ষ্টেফানের বয়স ৩৪ চত্রিশ।

তিনি এই বয়সেই হয়েছেন মিলিয়ন ডলারের মালিক। ব্যবসার পাশাপাশি রিয়েল এষ্টেট ব্যবসার খুঁটিনাটি, অর্থ সঞ্চয় ও আর্থিক স্বাধীনতা নিয়ে নানা ধরনের পরামর্শমূলক ভিডিও বানান, ইউটিউবে তাঁর চ্যানেলটি বেশ জনপ্রিয়। আর সেই জন্যই আপনাকে পড়তে হবে ও জানতে তার পরামর্শ সমূহ গুলোকে।

কোন কোন ৭টি পরামর্শ আপনাকে মানতে হবে

  • ১ আপনাকে খেয়াল রাখতে হবে, কার পরামর্শ নিচ্ছেন
  • ২ আপনাকে ভালো ক্রেডিট হিষ্ট্রি তৈরি করতে হবে
  • ৩ নিজের দক্ষতা বাড়াতে হবে
  • ৪ সম্ভাবনাময় ব্যবসায় নামুন
  • ৫ আয়ের একাধিক উৎস তৈরি করুন
  • ৬ জীবন যাপনের খরচ নিয়ন্ত্রনের মধ্যে রাখুন
  • ৭ দ্রুত বা তাড়াতাড়ি বিনিয়োগ করুন

আপনাকে খেয়াল রাখতে হবে, কার পরামর্শ নিচ্ছেন

বেশীর ভাগ সময় খারাপ আর্থিক পরামর্শ আসে সেসব ব্যক্তির কাছ থেকে, যারা সফল নন। ষ্টেফান বলেন, কার কাছে আপনি পরামর্শ চাইছেন, সেই ব্যাপারে সাবধানী হোন। পরামর্শ নিতে চাইলে আপনি এমন অনেক মানুষকেই পাবেন, যারা আদতে কিছু না করে, সফল না হয়েই আপনাকে বলবে কী করতে হবে বা কি করা উচিত।

সেই জন্য যারা নেতি বাচক কথা বলেন, নেতিবাচক চিন্তা করেন, তাদের থেকে দূরে থাকুন। আপনি ঠিক যাদের অনুসরণ করেন, যাদের মত হতে চান, শুধু তাদের পরামর্শ নিন।

আপনাকে ভালো ক্রেডিট হিষ্ট্রি তৈরি করতে হবে

আর্থিক সাফল্য অর্জনের জন্য শুরুতেই একটি ভালো ক্রেডিট হিষ্ট্রি তৈরি করা গুরুত্বপুর্ণ। আসলে ক্রেডিট হিষ্ট্রি মানে কোনো ব্যক্তির সময়মতো ধার পরিশোধ করার সক্ষমতার রেকর্ড। অর্থাৎ কোনো ব্যাক্তি যে কোনো আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে রিন ধার নিয়ে তা সময়মতো পরিশোধ করতে সক্ষম কিনা, তার একটি রেকর্ড হলো এই ক্রেডিট হিষ্ট্রি।

প্রথমে একটা বিশ্বাসযোগ্য আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে ক্রেডিট তৈরি করতে পারেন। শুরুতে সেখান থেকে হিসাব করে খরচ করুন আর তা নিয়মিত পরিশোধ করার চেষ্টা করুন। এটি আপনাকে বেশ ভালো একটি ক্রেডিট হিষ্ট্রি তৈরি করতে সাহায্য করবে।  আপনার ক্রেডিট স্কোর হলো কোনো ব্যক্তির রিন বা ধার সময় মতো পরিশোধ করার সক্ষমতার একটি সূচক।

ক্রেডিট ষ্কোর নজরদারির জন্য অনেক ফ্রি অ্যাপ্লিকেশন পাবেন।
ক্রেডিট শুরু করার ৬ থেকে ১২ মাস পর আরও ভালো বিকল্প ক্রেডিটের জন্যে আবেদন করুন। তবে নিয়মিত পাওনা পরিশোধের দিকে খেয়াল রাখবেন। এটি আপনার ভালো ক্রেডিট ষ্কোর বয়ে আনবে।

নিজের দক্ষতা বাড়াতে হবে

বয়স ২০ এর ( স্বাভাবিক ভাবেই বাংলাদেশীদের ক্ষেত্রে বয়সের সীমা বাড়বে) মধ্যেই কর্মক্ষেত্রে ভালো দক্ষতা অর্জনের দিকে গুরুত্ব দিতে বলেছেন ষ্টেফান। তিনি মনে করেন প্রতিটি কাজ থেকে অর্জন করা দক্ষতা পরবর্তী কর্মক্ষেত্রে আপনাকে অনেকটা এগিয়ে রাখবে। প্রথমে নিজের পছন্দের কাজ দিয়েই কর্মজীবন শুরু করতে পারেন।

পারিশ্রমিক পান বা না পান, কাজটা করতে থাকুন পারিশ্রমের চেয়ে দক্ষতা অর্জনের দিকে নজর দিন। শুরুর সময়টা জ্ঞানার্জনের জন্য ব্যয় করুন।

সম্ভাবনাময় ব্যবসায় নামুন
ষ্টেফান পরামর্শ দেন, আর্থিক উন্নতির জন্য পুরোপুরি চাকরির ওপর ভরসা না করে সম্ভাবনাময় কোনো ব্যবসা শুরু করা উচিত। এমন ব্যবসা শুরু করুন, যা ক্রমেই আপনার আয় বাড়বে, বিপরীতে ব্যয় রাখবে নিয়ন্ত্রনে। ত্রিশ ৩০ বছরে পা দেওয়ার আগেই ব্যবসা শুরু করে ভালো ভাবে দেখ ভাল করতে পারলে তা আপনার আর্থিক অবস্থার দ্রুত উন্নতি বয়ে আনবে।

ষ্টেফান আরও বলেন, যেকোনোও ব্যবসায়ই ভালো করা সম্ভব, যদি অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা বিভিন্ন রিসোর্স (তথ্য উপাত্ত) সঠিক ভাবে কাজে লাগানো যায়।

আয়ের একাধিক উৎস তৈরি করুন
আয়ের একক উৎসের ওপর নির্ভর করাকে বেশ ঝুঁকিপুর্ণ বলে মনে করেন ষ্টেফান। যুক্তরাষ্ট্রের ইন্টারনাল রেভিনিউ সার্ভিসের (আই আর এস) একটি গবেষনায় ফলাফল টেনে ষ্টেফান বলেন, বেশীর ভাগ ধনীর কমপক্ষে সাত ৭ ধরনের আয়ের উৎস থাকে। তিনি বিশ্বাস করেন, আয়ের উৎসে বৈটিত্র আনা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

চাকুরির লভ্যাংস, মুলধন অর্জন, রিয়েল এস্টেট ভাড়ার মতাে বিভিন্ন রকমের উৎস থাকলে কম সময়েই আর্থিক সাফল্য ও স্থিতিশীলতা লাভ করা যায়। এই ছাড়া আয়ের আরও নতুন নতুন সুযোগও সৃষ্টি হয়।

জীবন যাপনের খরচ নিয়ন্ত্রনের মধ্যে রাখুন
জীবন যাপনের খরচ নিয়ন্ত্রনে রাখার ব্যাপারে ষ্টেফান সাবধানী হতে বলেছেন। উদাহরণ দিতে গিয়ে বলেন, কারও আয় ৪০ হাজার ডলার থেকে ৬০ হাজার ডলার হলো। পরে তা বেড়ে ৯০ হাজার ডলারে গিয়ে দাঁড়াল। আয় বাড়লেও সনচয় সে হারে বাড়বে না। যদি কেউ জীবন যাপনের খরচ নিয়ন্ত্রনে না রাখতে পারেন।

এই ক্ষেত্রে সমাধান হলো, জীবন যাপনে নিয়ন্ত্রণ এনে খরচ কমিয়ে ফেলা। আয় বাড়লেও খরচ যাতে না বাড়ে সেই দিকে খেয়াল রাখা।

দ্রুত বা তাড়াতাড়ি বিনিয়োগ করুন
সর্বাধিক লাভের জন্যে ষ্টেফান দ্রুত বিনিয়োগের দিকে গুরুত্ব দিয়েছেন বেশী। বিনিয়োগ বৃদ্ধিতে সময়ের উল্লেখযোগ্য প্রভাব আছে বলে তিনি মনে করেন। ষ্টেফান বলেন, একজন ২০ বছর বয়সী ব্যক্তি ১ ডলার বিনিয়োগ করলে ৬৫ বছর বয়সে তা ২১ ডলারে গিয়ে দাঁড়াতে পারে। কিন্তু একই ব্যক্তি যদি ৩০ বছর বয়সে ওই ১ ডলার বিনিয়োগ করেন।

তাহলে বয়স ৬৫ তে গিয়ে তা বেড়ে হবে মাত্র ১০ দশমিক ৬৮  ডলার। নিজের অভিজ্ঞতা থেকে ষ্টেফান তাই যত বেশী টাকা যত দ্রুত সম্ভব বিনিয়োগ করার পরামর্শ দেন। তিনি বিশ্বাস করেন, এসব পরামর্শ মেনে চললে ২০ বছরের যেকোনো তরুন ৩০ এ পা দেওয়ার আগেই ধনী হয়ে উঠতে পারবেন।

লেখকের মন্তব্য

প্রিয় পাঠকগন আপনার এই লেখাটি পড়ে অবশ্যই কিছুটা অবগত হয়েছেন। তাই আপনি যদি আপনার লক্ষ্যে পৌঁছাতে চান তাহলে দেরি না করে কাজে নেমে পড়ুন আর কাজ করুন। কারণ একটি কথা আছে মানুষ মানুষকে ঠকাতে পারে কিন্তু কাজ কখনও কাউকে ঠকায় না তাই মনোযোগ সহকারে কাজ করুন সাফল্য অবশ্যই পাবেন।

 

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url