ভিসা ছাড়াই যেসব ৪২টি দেশে যেতে পারবে বাংলাদেশী পাসপোর্টধারীরা

প্রিয় পাঠকগন, আজকে আমি আপনাদের মাঝে কিছু বিষয় জানাতে চাই। সেটি হল আপনার পাসপোর্ট আছে ভিসা নেই আর কোথাও যেতে পারছেন না সেই বিষয়ে। আপনারা জেনে খুশি হবেন যে এখন থেকে যদি আপনার পাসপোর্ট থাকে তাহলে আপনি ভিসা ছাড়াই যে সব দেশে যেতে পারবেন তা হলো-

ভিসা ছাড়াই যেসব ৪২টি দেশে যেতে পারবে বাংলাদেশী পাসপোর্টধারীরা

বিশ্বের অনেকগুলো দেশে ভিসা ছাড়াও যাওয়া যায় তা কিন্তু আপনি জানেন না। তবে বাংলাদেশী পাসপোর্ট থাকলেই আপনি কোনো ধরনের ভিসা ছাড়াই বিভিন্ন কুড়িটি ২০টি দেশে ভ্রমনের করার সুযোগ পাবেন। 

ভূমিকা

পাসপোর্ট থাকলেই আপনি পাবেন বিশ্বের কুড়িটি ২০ টি দেশে ভিসা ছাড়াই ভ্রমনের সুযোগ কত না আনন্দের বিষয় এটি তাই নই কি? তাই আর দেরি না করে আপনার যদি পাসপোর্ট থেকে থাকে তাহলে তো কোন কথা নেই আর যদি পাসপোর্ট না থেকে থাকে তাহলে দ্রুত পাসপোর্ট করে ফেলুন আর ভিসা ছাড়াই বিশ্বের বিভিন্ন দেশ ঘুরে আসুন।

মানে প্রায় ২০ টি দেশে ঘুরে আসতে পারবেন খুব সহজেই। তবে ভিসা ছাড়াই তালিকায় থাকা ৪২ টি দেশের যেকোনো একটিতে যেতে হলে আপনাকে শুধুমাত্র কয়েকটি বিষয় খেয়াল রাখতে হবে,  যেমন আপনার পাসপোর্টটি অবশ্যই অবশ্যই বৈধ হতে হবে। সাধারণত, বেশীরভাগ দেশের ক্ষেত্রেই বাংলাদেশী পাসপোর্টটি গন্তব্যস্থান থেকে প্রস্থানের তারিখ জানা দরকার।

অর্থাৎ দেশটি যে ছেড়ে এসেছেন সেই আসার তারিখের পর থেকে ৬ মাসের জন্য বৈধ হতে হবে। আপনাকে জানতে হবে আপনি যে দেশে যাচ্ছেন সেটির জন্য সঠিক স্বাস্থ্য বীমা (Health Insurance) ক্রয় করে রাখা খুবই জরুরি। এই ছাড়াও আপনি কোথায় যাচ্ছেন তার উপর নির্ভর করে বীমার ধরন ও মূল্য ভিন্ন হতে পারে।

বাংলাদেশী পাসপোর্ট দিয়ে ভিসা ছাড়াই যে ৪২টি দেশে ঘুরে আসতে পারেন

এশিয়ার ৬টি দেশ

  • ১ ভুটান
  • ২ মালদ্বীপ
  • ৩ নেপাল
  • ৪ কম্বোডিয়া
  • ৫ শ্রীলঙ্কা এবং
  • ৬ পূর্ব তিমুর

উত্তর আমেরিকা (ক্যারাবিয়ান এলাকা) ১১টি দেশ

  • ১ বাহামাস
  • ২ বার্বাডোস
  • ৩ ব্রিটিশ ভার্জিন দ্বীপসমূহ
  • ৪ ট্রিনিডাড ও টোব্যাগো
  • ৫ ডোমিনিকা
  • ৬ গ্রেনাডা 
  • ৭ হাইতি
  • ৮ মন্টসেরাট
  • ৯ সেন্ট কিটস এবং নেভিস
  • ১০ জামাইকা
  • ১১ সেন্ট ভিনসেন্ট ও গ্রেনাডাইনস

ওশিয়ানিয়ার আটটি ৮টি দেশ

  • ১ কুক দ্বীপপুন্জ
  • ২ ফিজি
  • ৩ কিরিবাস বা কিরিবাটি
  • ৪ মাইক্রোনেশিয়া
  • ৫ নিউয়ে
  • ৬ সামোয়া
  • ৭ ভানুয়াটু
  • ৮ টুভালু

আফ্রিকার ১৬টি দেশ

  • ১ লেসোখো
  • ২ গাম্বিয়া
  • ৩ বুরুন্ডি
  • ৪ কেপ ভার্দে
  • ৫ টোগো
  • ৬ কমোরো
  • ৭ দ্বীপপুন্জ
  • ৮ জিবুতি
  • ৯ গিনি বিসাউ
  • ১০ মাদাগাস্কার
  • ১১ মৌরিতানিয়া
  • ১২ মোজাম্বিক
  • ১৩ রুয়ান্ডা
  • ১৪ সেশেল
  • ১৫ সিয়েরা লিওন ও
  • ১৬ সোমালিয়া

দক্ষিন আমেরিকার ১টি দেশ

  • ১ বলিভিয়া

বাংলাদেশি পাসপোর্ট থাকলে অন অ্যারাইভাল ভিসা (On Arrival Visa) নিয়ে ভ্রমন করে আসতে পারবেন যে সকল দেশে। আগে থেকে কোনও প্রকার ভিসা ছাড়াই বাংলাদেশী পাসপোর্ট দিয়ে উপভোগ করতে পারবেন অসাধারণ কিছু স্পষ্ট এটা হয়তো অনেক ভ্রমন প্রিয়াশিরাই শুধু কল্পনায় ছিল। ব্যাপারটা, এখন পুরোপুরি সত্যি আর তা হয়তো অনেকে জেনেও থাকবেন।

কিন্তু বাংলাদেশিদের জন্য অন এরাইভাল ভিসা ঠিক কোন কোন দেশে আছে সেই বিষয় নিয়ে বিভ্রাতিতে থাকতে পারে। আজকে একনজরেই দেখে আসতে পারবেন সেই দেশগুলোর ছক বা তালিকা করে পরিকল্পনা করে ফেলতে পারবেন আপনার পরবর্তি ট্রিপ সমুহ।

বাংলাদেশী পাসপোর্ট থাকলে অন অ্যারাইভাল ভিসা  ( On Arrival Visa) পাবেন যে সকল দেশে

এশিয়া

  • ১ মালদ্বীপ
  • ২ ভুটান
  • ৩ নেপাল
  • ৪ টিমর লেস্টে
  • ৫ শ্রীলঙ্কা

আফ্রিকা

  • ১ কাবো ভার্দে
  • ২ মৌরিতানিয়া
  • ৩ বুরুন্ডি
  • ৪ কমোরোস
  • ৫ গিনি বিসাউ
  • ৬ মাদাগাস্কার
  • ৭ রুয়ান্ডা
  • ৮ সিশেলস
  • ৯ সিয়েরা লিওন
  • ১০ সোমালিয়া

দক্ষিন আমেরিকা

  • ১ বলিভিয়া
  • ওশিয়ানিয়া
  • ১ টুভালু

ভিসা অন-অ্যারাইভাল এমন এক ধরনের ভিসা যেটির মাধ্যমে ডেস্টিনেশনে পৌঁছানোর আগে আপনাকে ভিসার জন্য আবেদন করতে হবে না । অর্থাৎ, আপনাকে আগে থেকে কোনো ডকুমেন্ট সংগ্রহ করার দরকার নেই। আপনি যেই দেশে যাচ্ছেন সেখানে পৌঁছে একটি অনুমোদিত পয়েন্টে প্রয়োজনীয় ফি দিয়েই আপনি আপনার ভিসাটি কালেক্ট করে নিতে পারবেন।

এই সম্পূর্ণ প্রসেসটি দেশভেদে কিছুটা পরিবর্তিত হতে পারে, তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই আপনি আপনার আবেদন জমা দেওয়ার ১০ মিনিটের মধ্যে আপনার ভিসা হাতে পেয়ে যাবেন। ভিসা অন-অ্যারাইভাল সাধারণত ট্যুরিস্টরাই ব্যবহার করে থাকেন এবং এর মেয়াদ থাকে ১৪ থেকে ৩০ দিন পর্যন্ত। তবে ভিসা অন-অ্যারাইভালের যেকোনো শর্ত উক্ত দেশগুলোর সিধান্ত অনুযায়ী চেঞ্জ হতে পারে।

বাংলাদেশী পাসপোর্ট দিয়ে ভিসা অন-অ্যারাইভালের জন্য আবেদন করার জন্য কি কি ডকুমেন্ট প্রয়োজন

একটি বৈধ পাসপোর্ট

  • নতুন ছবি (সাধারণত ৩ মাসের বেশি পুরানো নয়)। ছবির সাইজ নির্ভর করবে যেই দেশে যাচ্ছেন সেখানকার রিকোয়ারমেন্ট অনুযায়ী
  • ভিসা আবেদনপত্র (Visa Application Form)
  • প্রয়োজনীয় ফি দিতে ইন্টারন্যাশনাল ক্রেডিট কার্ড কিংবা ক্যাশ
  • ফ্লাইট টিকিট এবং হোটেল রিজার্ভেশনের কপি
  • ভ্রমণসূচী (Travel Itinerary) ইত্যাদি।

বাংলাদেশী পাসপোর্ট দিয়ে ই-ভিসায় ঘুরে আসতে পারবেন যে দেশগুলো থেকে

বর্তমান সময়ে প্রায় সব ট্রাভেলারদের মধ্যেই ই-ভিসা বেশ পরিচিত। ই-ভিসা মূলত সাধারণ ভিসার একটি ইলেক্ট্রনিক ভার্সন । এটি একটি নিয়মিত ভিসার মতোই কাজ করে তবে নিয়মিত ভিসার তুলনায় কিছু এটির সুযোগ-সুবিধা কিছুটা বেশি, কেননা ই-ভিসার আবেদনের জন্য আপনাকে এম্বাসির লম্বা লাইনে মোটেই দাঁড়িয়ে থাকতে হবে না।

যেই দেশে যেতে চান, সেখানের এম্বাসির পোর্টালে প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস আপলোড করলেই আপনার কাজ শেষ। অর্থাৎ, আপনাকে আর এম্বাসিতে সশরীরে উপস্থিত থাকতে হবে না বা ডকুমেন্টের কোনো হার্ড কপিও জমা দিতে হবে না। তাই বুঝতেই পারছেন, ই-ভিসা প্রক্রিয়াটি কতটা ঝামেলামুক্ত, সহজ এবং সময় সাশ্রয়ী!

বাংলাদেশী পাসপোর্টে ই-ভিসা অনুমোদনকারী দেশের তালিকা

  • এশিয়া
  • বাহরাইন
  • কাজাখিস্তান
  • কিরগিজস্তান
  • মালয়েশিয়া
  • মায়ানমার
  • কাতার
  • তাজিকিস্তান
  • ভিয়েতনাম
  • ইউরোপ
  • আলবেনিয়া
  • আফ্রিকা
  • বেনিন
  • বটসোয়ানা
  • বুর্কিনা ফাসো
  • ক্যামেরুন
  • কঙ্গো জাতীয় প্রজাতন্ত্র
  • আইভরি কোস্ট (কোট ডিভোয়ার)
  • জিবুটি
  • ইকুয়েটোরিয়াল গিনি
  • ইথিওপিয়া
  • গাবন
  • গিনি
  • কেনিয়া
  • মালাউই
  • মোজাম্বিক
  • নাইজেরিয়া
  • সাও টোমে এবং প্রিন্সিপে
  • দক্ষিণ সুদান
  • টোগো
  • উগান্ডা
  • জাম্বিয়া ও
  • জিম্বাবুয়ে

উত্তর আমেরিকা (ক্যারাইবিয়ান অঞ্চল)

  • অ্যান্টিগুয়া এবং 
  • বারবুডা

বাংলাদেশী পাসপোর্ট দিয়ে ই-ভিসায় ঘুরে আসতে পারবেন যে দেশগুলো থেকে

বর্তমান সময়ে প্রায় সব ট্রাভেলারদের মধ্যেই ই-ভিসা বেশ পরিচিত। ই-ভিসা মূলত সাধারণ ভিসার একটি ইলেক্ট্রনিক ভার্সন । এটি একটি নিয়মিত ভিসার মতোই কাজ করে তবে নিয়মিত ভিসার তুলনায় কিছু এটির সুযোগ-সুবিধা কিছুটা বেশি, কেননা ই-ভিসার আবেদনের জন্য আপনাকে এম্বাসির লম্বা লাইনে মোটেই দাঁড়িয়ে থাকতে হবে না।

যেই দেশে যেতে চান, সেখানের এম্বাসির পোর্টালে প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস আপলোড করলেই আপনার কাজ শেষ। অর্থাৎ, আপনাকে আর এম্বাসিতে সশরীরে উপস্থিত থাকতে হবে না বা ডকুমেন্টের কোনো হার্ড কপিও জমা দিতে হবে না। তাই বুঝতেই পারছেন, ই-ভিসা প্রক্রিয়াটি কতটা ঝামেলামুক্ত, সহজ এবং সময় সাশ্রয়ী!

কঙ্গো জাতীয় প্রজাতন্ত্র, আইভরি কোস্ট (কোট ডিভোয়ার), জিবুটি, ইকুয়েটোরিয়াল গিনি, ইথিওপিয়া, গাবন, গিনি, কেনিয়া, মালাউই, মোজাম্বিক, নাইজেরিয়া, সাও টোমে এবং প্রিন্সিপে, দক্ষিণ সুদান, টোগো, উগান্ডা, জাম্বিয়া, জিম্বাবুয়ে

উত্তর আমেরিকা (ক্যারাইবিয়ান অঞ্চল): অ্যান্টিগুয়া এবং বারবুডা

দক্ষিণ আমেরিকা: সুরিনাম

বাংলাদেশী পাসপোর্ট থাকলেও যেসব দেশ ভ্রমণ করতে আপনাকে ট্যুরিস্ট ভিসা নিতে হবে

নো-ভিসা, ই-ভিসা এবং ভিসা অন-অ্যারাইভাল নিয়ে সব প্রয়োজনীয় তথ্য জানার পর এবার পালা ভিসাসহ ট্রাভেল নিয়ে জানার। আপনার যদি একটি বৈধ বাংলাদেশী পাসপোর্ট এবং একটি ভিসা থাকে, তাহলে আপনি ঘুরে দেখতে পারেন পৃথিবীর অনন্য ১৬১টি দেশ! প্রকৃতির ভিন্ন ভিন্ন রূপ, চোখ ধাঁধানো আর্কিটেকচারসহ বিভিন্ন জনপ্রিয় স্পটের ছবিগুলো।

সেই সাথে মডার্ন ডিভাইসটিতে ক্যাপচার করতে বেশ ভালোই লাগবে! চলুন তবে জেনে নেওয়া যাক এই নিয়ে সব গুরুত্বপূর্ণ তথ্য।

বাংলাদেশ থেকে ট্যুরিস্ট ভিসা আবেদনের জন্য কিছু বেসিক ডকুমেন্ট

  • ভিসা আবেদনপত্র (Visa Application Form)
  • একটি বৈধ পাসপোর্ট (অন্তত ছয় মাসের বৈধতা) যেখানে পরিদর্শনকারী দেশটির জন্য প্রয়োজনীয় কয়েকটি ফাঁকা পৃষ্ঠা রয়েছে।
  • পুরানো পাসপোর্ট (যদি থাকে)
  • রিসেন্ট ছবি (সাধারণত ৩ মাসের বেশি পুরানো নয়)। ছবির সাইজ নির্ভর করবে যেই দেশে যাচ্ছেন সেখানকার রিকোয়ারমেন্ট অনুযায়ী
  • ফ্লাইট টিকিট এবং হোটেল রিজার্ভেশনের কপি
  • ভ্রমণসূচী (Travel Itinerary) ইত্যাদি
  • আর্থিক স্বচ্ছলতার প্রমাণ (সাধারণত লাস্ট ৬ মাসের ব্যাংক স্টেটমেন্ট)
  • বিবাহ সার্টিফিকেট 

লেখকের মন্তব্য

আবারও আমি আপনাদেরকে উৎসাহ দিতে চাই আপনারা সময় করে পাসপোর্ট করার মাধ্যমে ভিসা ছাড়াই এই সব দেশ গুলোতে ঘুরে আসুন। সেই সাথে অন অ্যারাইভাল ভিসা (On Arrival Visa) জন্য আপনি অনেক গুলো দেশে ভ্রমন করার সুযোগ পেয়ে থাকবেন।



এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url