আমলকির চেয়ে বেশী পুষ্টিকর এই কেওড়া ফলটি বিস্তারিত জানুন

আজকে আমি আপনাদেরকে এমন একটি ফলের বিষয়ে বলব যেটির নাম অনেকেই শুনেছেন আবার অনেকজন নাও শুনে থাকতে পারেন। তবুও আমি আমার দিক থেকে আপনাদের মাঝে এই ফলটির বিষয়ে জানাতে চাই, সেই জন্য আপনারা আমার সঙ্গে সঙ্গে থাকবেন তাহলে বিস্তারিত জানতে পারবেন।
আমলকির চেয়ে বেশী পুষ্টিকর এই কেওড়া ফলটি বিস্তারিত জানুন

আসলে ফলটি আমলকির মত হলেও এর গুনাগুন আমলকির চেয়ে অনেক গুন বেশী উপকারী। তবে এই ফলটি বিশেষ করে খুলনা এলাকায় বসবাসকারী লোকজনেরাও বেশী খেয়ে থাকেন এই ফলটিকে।

ভুমিকা

কেওড়া ফল আমরা অনেকেই চিনি আবার অনেকেই চিনি না কেওড়ার জল আমাদের উপমহাদেশের হেঁসলে বহুল ব্যবহারিত এক খাদ্যোপযোগী সুগন্ধি উপকরণ কেওড়া আর ফুলের আছে মিষ্টি সুভাষ আর তার নির্যাস দিয়েই কেওড়ার জল তৈরি হয়। তবে কেওড়ার ফল বেশিরভাগ খুলনা ও সুন্দরবন সংলগ্ন অঞ্চল ছাড়া অন্য কোথাও সেই ভাবে খাওয়ার কথা জানা যায় না।
কিন্তু খুলনার মানুষ যুগ যুগ ধরে কেওড়া ফল দিয়ে ছোট ছোট চিংড়ি ও মসুরের ডাল রান্না করে খেয়ে থাকেন। তবে এই অঞ্চলের লোকেরা এটিকে স্থানীয় ভাবে বলা হয় এই কেওড়া ফল এমনিতে টক স্বাদের আর ভিটামিন সি এর ভরপুর ও খুনিস্বরুপ। এই খাটটা রান্না করতে প্রয়োজন যথেষ্ট মুন্সিয়ানার।
কেওড়া ফলের বিচিত্র অংশ মিশে গেলেই খাটটার সাত নষ্ট হয়ে যাবে। সেই জন্য অনেকে এতে গুড় মিশিয়ে দেন। আবার কেওড়া ফল দিয়ে আচার আর চাটনিও তৈরি করা হয়ে থাকে। আমলকির মত করেই এই ফলগুলো পেটের অসুখের চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয়। এই ফরটির গুন হিসেবে বলা হয় কেওড়া ফল আমাশয় দূর করে।
খুলনা অঞ্চলে একটু খোঁজ খবর নিলে পাওয়া যায় এই ফলটির বিস্তারিত জানা যায়। কারণ এই অঞ্চল জুড়ে এটা যেখানে সেখানে অনেক আছে। আর এটি কিন্তু আবার বানরের প্রিয় খাবার এইছাড়াও এর পুষ্টিগুন এতই বেশি যে কেওড়া ফল খাওয়ার প্রচলন আরো বাড়ানো প্রয়োজন। সেই সাথে সাথে এটির গাছের চারা রোপনের মাধ্যমেও সম্প্রচার করা দরকার।
তবে, এটি সারা দেশব্যাপী সব অঞ্চলেই সম্প্রতি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় এবং খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা প্রকল্পের অধীন বিশ্ববিদ্যালয়টির অধ্যাপক শেখ জুলফিকার হোসেনের করা গবেষণার ফলাফলসহ প্রকাশিত প্রবন্ধে দেখা যায়, কেওড়া ফল পুষ্টির দিক থেকে প্রচলিত সব ফলকে হারিয়ে দিচ্ছে। এতে রয়েছে ১২% শর্করা। 
এই ছাড়াও চার ৪ শতাংশ আমিষ, ১.৫% চর্বি, কেওড়া ফলে আরো মিলবে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন। বিশেষত ভিটামিন সি ও এর যোগ গুলো কেওড়া ফল বিভিন্ন অ্যাক্সিডেন্ট ও মনকে সতেজ রাখার সঙ্গে সঙ্গে বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধে কার্যকর ভুমিকা পালন করে থাকে। কারণ এতে বিভিন্ন ধরনের পলি ফেনাল প্রচুর পরিমাণে রয়েছে।
কেওড়া ফল বিভিন্ন ভাবে অনুভূতি ও কাজ করার উৎসাহ দেয় ও শক্তির যোগান দেয়। তবে দেশি ফল গুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি পলিফেনাল রয়েছে আমলকি আর কেওড়া ফলেই। তাই আসুন কেওড়া ফল বেশী করে খাওয়ার চেষ্টা করি সেই সাথে দেশের উন্নয়ন সাধন করি।
এই ফলে সমপরিমাণ আপেল ও কমলার তুলনায় অনেক বেশি পলিফেনাল ও অন্যান্য পুষ্টি উপাদান রয়েছে। পলিফেনাল এমন একটি উপাদান যা আমাদের দেহে ডায়াবেটিস ক্যান্সার আর্থাইটিস হৃদরোগ এলার্জি চোখের ছানি বিভিন্ন ধরনের প্রদাহ ও ব্যথা বেদনাসহ প্রভৃতি রোগ প্রতিরোধ ও প্রশম বা দূর করে।
তবে বিশেষ করে কেওড়া ফলে আমলকি আপেল ও কমলার তুলনায় বেশি পরিমাণে পটাশিয়াম, আয়রন, ক্যালসিয়াম, ফসফরাস, ম্যাগনেসিয়াম ও জিম রয়েছে। এই ফলের আরো রয়েছে ডায়রিয়া ও ডায়াবেটিস প্রতিরোধে আর ব্যথানাশক গুন। এই ফলটি ডায়রিয়া আমাশয় ও পেটের জন্য দায়ী জীবাণুকে কার্যকর ভাবে দমন করতে পারে।
এছাড়া কেওড়া ফলে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ পালমিটিক অ্যাসিড, অ্যাসকর বাইল, পালমিটেট ও স্টিয়ারিক এসিড। এই উপাদানগুলো খাদ্যশিল্পে খাদ্য প্রক্রিয়াকরণে ও তৈরি খাদ্য সংরক্ষণের জন্য ব্যবহৃত হয়। অথচ এগুলো কিনতে আমাদের গুনতে হয় বৈদেশিক মুদ্রা। তাই কেওড়া ফলের প্রচলন ও প্রক্রিয়াজাতকরণ বাড়লে সবদিক থেকেই উপকার পাব আমরা। 

কেওড়া ফলে কি কি পুষ্টি পাওয়া যায়

  • পালমিটিক অ্যাসিড
  • অ্যাসকর বাইল
  • পালমিটেট
  • স্টিয়ারিক এসিড
  • পটাশিয়াম
  • আয়রন
  • ক্যালসিয়াম
  • ফসফরাস
  • ম্যাগনেসিয়াম ও 
  • জিম
  • পলিফেনাল
  • ১২% শর্করা
  • ৪ শতাংশ আমিষ
  • ১.৫% চর্বি
  • ভিটামিন সি

কেওড়া ফল কি ধরনের রোগ প্রতিরোধ করে

  • ডায়াবেটিস
  •  ক্যান্সার
  •  আর্থাইটিস হৃদরোগ
  • এলার্জি
  • চোখের ছানি
  • বিভিন্ন ধরনের প্রদাহ ও 
  • ব্যথা বেদনা

লেখকের মন্তব্য

আপনারা কেওড়া ফলের পুষ্টিগুন ও এর ফলাফল সম্পর্কে বিস্তারিত জেনেছেন। সেই জন্য আপনারা আসুন আমলকির মত এই সেই কেওড়া ফলগুলোকে সংরক্ষনের জন্য বেশী বেশী গাছ রোপনের মাধ্যমে সারা দেশব্যাপি রোপন করি। সেই সাথে আমাদের দেশটিকে ফলে ফলে সমৃদ্ধ করে তুলি। 

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url