গ্রীষ্মকালে বা গরমকালে শিশুর যত্ন কিভাবে নিবেন বিস্তারিত জেনে নিন
গ্রীষ্মকালে বা গরমকালে শিশুর যত্ন কিভাবে নিবেন বিস্তারিত জেনে নিন
২০২৪
সালের ক্যালেন্ডারের পাতায় গ্রীস্মকাল আরম্ভ হতে কয়েকটা দিন
বাকি থাকলেও গ্রীস্মকালের গরমের দাপট কিন্তু দেখাতে
আরম্ভ হয়ে গেছে। সকালে
বেলা বাড়ার সাথে সাথে দ্রুত
বাড়তে থাকে ঝাঝালো রোদ,
সেই সাথে সাথে বাড়তে
থাকে তাপমাত্রাও আর বাড়তে থাকে
অস্বস্থি গরম।
গ্রীষ্মকালে শিশুর বেশী বেশী যত্ন নেওয়া
এই সময় গরমে যেমন বড়দের অবস্থা অস্বস্থিকর হয় তেমনি শিশুদের অবস্থাও খুব খারাপ হয়ে যায়। আর শিশুরা যেহেতু স্পর্শকাতর সেইজন্য গরমে শিশুদের প্রয়োজন বেশী বেশী যত্ন নেওয়া। গ্রীস্মকালে বাচ্চাদের যত্নের বিষয় নিয়ে শিশু বিশেষজ্ঞ ডাক্তার ফারহানা পারভিন ফ্লোরা কিছু সুপরামর্শ দিয়েছেন।
তবে চলুন সেই সম্পর্কে একটু জেনে নেওয়া যাক- অতিরিক্ত গ্রীস্মকালের গরমে ঘেমে গিয়ে শিশুর পানিশূন্যতা যেন না হয় সেই সব বিষয়ে বেশী বেশী খেয়াল করুন। কিছুক্ষণ পর পর শিশুকে জল বা যেকোন ধরনের ফলের রস বা জুস খাওয়ান। এই ছাড়াও সিজনাল বিভিন্ন ফলও শিশুর পছন্ত মত পান করাতে পারেন।
যে সকল শিশুদের বয়স ৬ মাসের কম। সেই সব শিশুদের ক্ষেত্রে মায়ের বুকের দুধই একমাত্র খাবার। সেইজন্য শিশুদেরকে বার বার বুকের দুধ পান করাতে হবে। শিশুরা বুকের দুধ খেতে আগ্রহী না হলে কিছুক্ষণ পর পর অল্প করে পান করাতে হবে।
যেসকল খাবার সহজে হজম হয়
খুব সহজে যেসকল খাবার হজম হবে সেগুলো দিতে হবে যেমন:
- শাক সবজি,
- মাছ,
- খিচুড়ি ইত্যাদি
তবে যতটা সম্ভব নরম
বা পানিয় জাতের খাবার দিতে হবে। গ্রীস্মকালে
মসলা, ভাজাভুজি, ঝালঝোল এই ধরনের তৈলাক্ত
খাবার না খাওয়াই ভাল।
পোশাকের প্রতি খেয়াল রাখা
পানি শোষন ক্ষমতা কিন্তু সুতি কাপড়ের বেশি। সেই জন্য গ্রীস্মকালের তাপদাহে বা গরমে শিশুকে সুতির জামা কাপড় পরা ভালো। জামা কাপড় গরমে ভিজে গেলে সঙ্গে সঙ্গে জামা কাপড় খুলে শরীরের বা দেহের ঘামগুলো মুছিয়ে দেওয়া ভালো।
এছাড়াও অল্প পরিমাণ পাউডার
দেওয়া ভালো। শরীরের ঘাম শুকিয়ে গেলে
অন্য আরেকটি জামা কাপড় পরিয়ে
দেওয়া ভালো। শরীরের বা দেহের ঘাম
যেন শরীরেই না শুকায় সেই
সব বিষয়ে খেয়াল রাখা ভালো।
গ্রীস্মকালের
গরমে বেশী বেশী দৌড়াদৌড়ি
বা অতিরিক্ত
ছোটাছুটির ফলে শিশুরা ঘেমে
যায় আর এতে তাদের
ঠান্ডা লাগতে পারে। সেইজন্য অনেক ধরনের ইনডোর
খেলা যা ঘরের মধ্যে
বসেই খেলা যায় আবার
এতে বেশী শারীরিক পরিশ্রমও
হয়না এমন খেলা ধুলার
জিনিষপত্র ক্রয়
করে ব্যবহার করতে পারেন।
গ্রীস্মকালের তাপদাহ গরমে শিশুকে নিয়ে দূরে কোথাও ভ্রমনে না যাওয়াটাই অনেক বেশী ভাল হবে। বিশেষভাবে বাতাস বিহিন গাড়ি অথবা বাসে ভ্রমন না করাই ভালো। যতদূর সম্ভব নদীপথে নৌকা, স্টিমার বা লঞ্চ ভ্রমন করা ভালো। খুবই দরকার হলে, সমস্ত ধরনের সতর্কমুলক ব্যবস্থা নিয়ে যাতায়াত করা বা ভ্রমন করা ভালো।
সুস্থতা থাকতে যে সকল কাজ করবেন
- প্রচুর পরিমাণে পানি পান করুন
- স্বাস্থ্যকর ও হালকা খাবার খান
- ভারী খাবারকে এড়িয়ে চলবেন
- চোখের সুরক্ষা বজায় রাখুন
- রাস্তার পাশের খাবার এড়িয়ে চলুন
- নিয়মিত গোসল করুন
- আরামদায়ক পোষাক পরিধান করুন
- এসিতে বেশিক্ষণ থাকবেন না।
মৌসুমী কাল আমাদেরকে কি শিক্ষা দেয়
মৌসুমী কাল
আমাদেরকে সবচেয়ে বড় যে শিক্ষা দেয় সেটি হল পরিবর্তনশীলতা, চপলতা ও অস্থিরতার প্রকৃতি
অর্থাৎ যে সব জিনিষগুলো ধারাবাহিকভাবে, ক্রমাগতভাবে বা একটানা পরিবর্তন করা হয় বা বদল
করা হয়।”
বাটিমার বলেছেন,
আপনি আপনার জীবন কালে অনেক মৌসুমী কালের অনুভূতি লাভ করতে পারেন যেমন- বিভিন্ন সময়
বা কালভেদে বসন্ত কাল, গ্রীষ্ম কাল, শরৎ কাল ও শীত কাল। কিন্তু প্রত্যেকটি মৌসুম আপনাকে
অবহিত করে আর প্রকৃতিকে বা সৃষ্টিকে সম্মান করবার জন্য আপনাকে ইশারা দিতে পারে।
বৈশাখ আর জ্যৈষ্ঠ মিলে গ্রীষ্মকাল
বাংলা বর্ষপুন্জি অনুসারে প্রথম ২ দুই মাস হল বৈশাখ আর জ্যৈষ্ঠ মিলে গ্রীষ্মকাল। বিশেষ করে এই সময় গুলোতে রবির প্রচন্ড প্রখর তাপে ভূমি গরম হয়ে উঠে, জল শুকিয়ে শেষ হয়ে যায়, ছোট বড় অনেক নদ নদী তাদের সৌন্দয্য হারিয়ে ফেলে, আর সেই সময় জলশূণ্য মাটি চৌচির হয়ে ফাটল ধরে।
গ্রীষ্ম
কালের শেষ মূহুর্তে সন্ধ্যা হয়ে আসলে পর সেই সময় প্রচন্ড শক্তিশালী কাল বৈশাখী ঝড় ধেয়ে
আসে আর প্রকৃতিকে লন্ড ভন্ড করে চলে যায়।
গ্রীষ্মকাল হচ্ছে বছরের সবচেয়ে তাপদাহ ও গরম কাল। এই সময় এটি পৃথিবীর উত্তর গোলার্ধে সাধারনত জুন, জুলাই ও আগষ্ট মাসকে মিলিয়ে নিয়ে অবস্থান করিয়া থাকে।
পৃথিবীর সব জায়গায় গ্রীষ্মকাল
হল টান টান করিয়া বাঁধানো একটা সময়। একমাত্র শীতপ্রধান দেশগুলোতে গ্রীষ্মকাল খুবই মিষ্ট,
বরনীয় ও চমৎকার। কারণ সেই সময় সেই সমস্ত দেশে শীতকালে কোন ধরনের ফসল উৎপাদন হয় না।
শুধুমাত্র গ্রীষ্মকালেই সব ধরনের ফসল উৎপাদন করিয়া রাখতে হয়।
কবিদের ভাষায় গ্রীষ্মকাল
বাংলা বর্ষপুন্জি অনুসারে বৈশাখ ও জ্যৈষ্ঠ প্রথম এই দুই মাস হচ্ছে গ্রীষ্মকাল। প্রথম বা পহেলা বৈশাখ, বাংলা বর্ষপুন্জির অনুসারে প্রথম দিন, বাংলা নববর্ষের প্রথম দিন। বাংলা বছরের প্রথম মাসটি হলো বৈশাখ মাস। বৈশাখ ষড়ৎ কালের প্রথম কাল গ্রীষ্মের প্রথম মাস।
বৈশাখের প্রথম দিন থেকে বাঙালি জীবনে নতুন বছরের আরম্ভ বা সূচনা। সেই
দিনটি সকাল থেকে সন্ধ্যা অগ্রবর্তী হয়ে উঠে উৎসব বা পর্ব পালনে মুখরিত চারদিকে
শুধু হৈ চৈ ভোঁ ভাঁ শব্দ।
বাঙালী মানেই তো উৎসব পর্ব, তথা
বারো মাসে তেরো পার্বণ।
তাই তো রবীন্দ্রনাথ বলেছেন,
প্রতিদিন মানুষ ক্ষুদ্র,দীন, একাকী
কিন্তু উৎসবের দিনে মানুষ বৃহৎ,
সে সমস্ত মানুষের সঙ্গে একত্র হইয়া বৃহৎ,
সেদিন সমস্ত মনুষ্যত্বের শক্তি অনুভব করিয়া সে বৃহৎ।
গ্রীষ্মের কবিতায় জ্যৈষ্ঠের খরতাপ, তীক্ষনতায়
এবয় তাপদাহও উঠে এসেছে নানা কবিতা কাব্যে।
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তার দুই ’বিঘা জমি’তে লিখেছেন-
সেই মনে পড়ে জ্যৈষ্ঠের ঝড়ে রাত্রে নাহিকো ঘুম,
অতি ভোরে উঠে তাড়াতাড়ি ছুটি আম কুড়াবার ধুম।
জ্যৈষ্ঠ নিয়ে আরও অনেক কবিতা আছে। যেগুলোতে আমরা গ্রীষ্ম কালের ভিন্ন ভিন্ন রুপ প্রত্যক্ষ করিয়া থাকি।
কবি ফজলুর রহমান তার কবিতায় লিখেছেন-
’ঘাম ঝরে দর দর গ্রীষ্মের দুপুরে
মাঠ-ঘাট চৌচির,
জল নেই পুকুরে।’
’রোদ যেন নয় শুধু ঘন ফুলকি
আগুনের ঘোড়া যেনো ছুটে চলে দুলকি।’
গ্রীষ্ম কাল শুধু ধ্বংস, লুঠন,খরতাপ কিংবা
নতুনের আমন্ত্রণ নিয়েই আসে না। গ্রীষ্মকাল আসে মৌসুমী ফলের পুঁজি নিয়ে। তাইতো
পল্লী কবি জসীমউদ্দীন তারই প্রতিচ্ছবি এঁকেছেন ‘মামার বাড়ী’ কবিতায়- ‘ঝড়ের দিনে
মামার দেশে আম কুড়াতে সুখ
পাকা জামের মধুর রসে রঙিন করি মুখ।’
কাগজে কলমে বসন্ত কাল হলেও মুলত পুষ্প উৎসবের
কাল গ্রীষ্মকালকেও বলা যায়। এই মৌসুমে গাছে গাছে বিভিন্ন রঙের যে সব ফল ফলাদি দেখা
যায়, তা অন্য কোন কালে দেখা যায় না। সত্যি পুষ্পবীথির রং এতই আবেদনময়ী বা কামনাময়ী
যে চোখ ফেরানো যায় না।
গ্রীষ্মকালের জিনিয়া ফুল
শীত কাল এবং গ্রীষ্ম কাল এই দুই সময়েই এই ফুলটি দেখা যায়। তবে বর্তমান সময়ে জিনিয়াকে গরমের ফুল হিসেবেই জানা যায়। এই ফুলের গাছ গুলো বাড়ির ছাদ থেকে আরম্ভ করে বাগানেও আপনি খুব সহজে এই ফুলের তারল্যতা পেতে পারেন। তবে জিনিয়ার জন্য সবচেয়ে বেশী যেটি প্রয়োজন সেটি হলো উর্বর মাটি এবং প্রচুর পরিমান জল।
গ্রীষ্মকালের আরেকটি আকর্ষণীয় ফুলের নাম হলো গুলাস। গ্রীষ্মকালে
পাতাহীন গাছে ডালের ডগায় থোকা থোকা করে ফুল ফোটে। গুলাস গাছের উচ্চতা আট ৮ থেকে দশ
১০ মিটার দূরবর্তী বিস্তারিত বা প্রসারিত হয়ে থাকে। এটিতে জাত ভেদে সাদা, লাল,
গোলাপি এবং হলুদ রঙের ফুল দেখা যায় এই গুলাস গাছের ডালে ডালে।
গ্রীষ্মকালের অবস্থান আসলে কতদিন থাকে
আমরা যদি সাধারণ
ভাবে দেখি তাহলে বিভিন্ন মৌসুমি কাল গুলোকে বিভিন্ন ভাবে ডাকা হয় যেমন বসন্ত কাল (মার্চ,
এপ্রিল ও মে), গ্রীষ্মকাল ( জুন, জুলাই ও আগষ্ট), শরৎ কাল (সেপ্টেম্বর, অক্টোবর ও নভেম্বর)
আর শীতকাল হলো (ডিসেম্বর, জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারি) মাসকে নির্ধারণ করা হয়েছে।
গ্রীস্মকালের অর্থ বা মানে কি
গ্রীস্মকাল
হচ্ছে সাধারণত বছরের কঠিন বা প্রচন্ড একটি গরম কাল। এই সময়ে সাধারণত পৃথিবীর উত্তর
গোলার্ধে জুন, জুলাই আর আগষ্ট মাস জুড়ে তা অবস্থান করে থাকে। সারা বিশ্বের বা পুথিবীর
সমস্ত বা সর্বত্রই গ্রীস্ম কাল হলো কর্মোদ্যমের সময় বা আরম্ভ করার সময়।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url